- Dr. Utpal Chowdhury
-
40-37, 76th Street,1st Floor
(Corner of Broadway & 76th St.)
Elmhurst, NY 11373 - Mon,Tue & Thu: 9 am to 3 pm
- Wed & Fri : 5 pm to 9 pm
- Sunday : 9 am to 3 pm ( by appointment)
- truemedicalcare2016@gmail.com
-
24/7 call answer for emergency.
JACKSON HEIGHTS OFFICE
JAMAICA OFFICE
- Dr. Utpal Chowdhury
-
167-02 Highland Ave, 1st Floor
(Corner of Highland Ave. & 167th St.)
Jamaica, NY 11432 - Mon & Thu: 5 pm to 9 pm
- Wed & Fri : 9 am to 3 pm
- Sunday : 9 am - 3pm
- truemedicalcare2016@gmail.com
LANGUAGES WE SPEAK
- English
- Bengali
- Hindi
- Urdu
- Nepali
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ
ক্যান্সার! শোনার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে যায় এবং নিশ্চিত মৃত্যু বলে মনে করে। আসলে তা ঠিক নয়। এ রোগ যদি সূচনায় ধরা পড়ে এবং সময়মতো চিকিৎসা দেয়া যায় তাহলে এক-তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা যায়। বাকি এক-তৃতীয়াংশ চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাকি এক -তৃতীয়াংশ অনেক দেরিতে ধরা পড়ে বলে নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে উপশম করা যায়। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এবং ক্যান্সার সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। তবে এটা ঠিক, ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যয়বহুল।
স্তন ক্যান্সার মহিলাদের অন্যতম প্রধান ক্যান্সার। আমাদের দেশে যতটুকু তথ্য, উপাত্ত আছে তাতে দেখা যায় ব্যাপকতার দিক দিয়ে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের সমান্তরালে এর অবস্থান। পৃথিবীতে অনেক দেশেই মহিলাদের এক নম্বর ক্যান্সার হলো ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং সাধারণত প্রতি এক লাখ মহিলার মধ্যে আশি জনের বেশি প্রতিবছর আক্রান্ত হন। আমাদের দেশে সকল মহিলা ক্যান্সার রোগীর প্রায় ২০-২৫ শতাংশই স্তন ক্যান্সার। সাধারণত স্তনের দুগ্ধবাহী নালীতে হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি স্তনের অন্যান্য কলা থেকেও শুরু হতে পারে। এটি পি- বা চাকা হিসেবেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম ধরা পড়ে এবং ক্যান্সার রোগের সাধারণ নিয়মÑধীরে ধীরে বড় হয় এবং শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। স্তনের সঙ্গে নিকটস্থ বাহুমূলের লসিকা গ্রন্থিগুলোর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকায় এগুলোতে টিউমার ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা সর্বপ্রথম এবং সর্বাধিক।
স্তন ক্যান্সারের উপসর্গ ও লক্ষণসমূহ যা রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে
* স্তনে চাকা বা পি-,
* স্তনের আকারের পরিবর্তন,
* স্তনের বোঁটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া, অসমান বা বাঁকা হয়ে যাওয়া,
* স্তনের বোঁটা দিয়ে অস্বাভাবিক রস বা রক্তক্ষরণ হওয়া,
* চামড়ার রঙ বা চেহারার পরিবর্তন,
* উন্মুক্ত ক্ষত,
* বগতলায় পি- বা চাকা এবং
* বাহুমূলে স্তনে ব্যথা।
প্রাথমিকভাবে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধোযোগ্য না হলেও এই রোগের ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে সর্বসাধারণের মাঝে প্রচারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে কোন কোন ক্ষেত্রে ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেবে। এই ঝুঁকি বাড়ে সাধারণত বয়স যখন পঞ্চাশের উধ্বে, মেদবহুল শরীর এবং যারা অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার খেয়ে থাকে, যাদের পরিবারে আরও মহিলাদের স্তন ক্যন্সার আছে বা ছিল, অল্প বয়সে মাসিক শুরু বা অধিক বয়সে মাসিক শেস হওয়া, একেবারেই গর্ভবতী না হওয়া, অধিক বয়সে প্রথম গর্ভধারণ, বুকের দুধ না খাওয়ানো, স্তনে অন্য ধরনের সাধারণ চাকা, যাদের জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হয়েছে, যারা স্তনে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মুখোমুখি হয়েছে, যেমন এক্সরে। তবে মনে রাখতে হবে, স্তনে চাকা বা পি- হলে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা রয়েছে; তেমনি সব চাকাই যে ক্যান্সার তাও নয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে স্তনের চাকার ক্ষেত্রে শতকরা দশভাগ পর্যন্ত ক্যান্সার হিসেবে চিহ্নিত হয় বাকি নব্বই ভাগই সহজে নিরাময়যোগ্য সাধারণ রোগ। সুতরাং সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোধের ধরন জানা অত্যন্ত জরুরী। স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের জন্য একটি কার্যকরী পদ্ধতি হলো নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করা (ইৎবধংঃ ঝবষভ ঊীধসরহধঃরড়হ: ইঝঊ)। প্রতিটি মহিলাই যদি প্রতিমাসে নিজের স্তন মাসিক শেষ হওয়ার পর পরই একটি নির্দিষ্ট দিনে ভালভাবে পরীক্ষা করেন তাহলে যে কোন ধরনের অসামঞ্জস্য ও অসুবিধা নিজেই চিহ্নিত করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন। নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করার ধাপ রয়েছে সেই মোতাবেক পরীক্ষা করাই শ্রেয়। ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য সাধারণত সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন:
* স্বাস্থ্য শিক্ষা ও প্রচারের মাধ্যমে,
* নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষার অভ্যাস গড়ে তোলা,
* চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা স্তন পরীক্ষা এবং
* আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ম্যামোগ্রাফি (প্রয়োজন)।
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা
এই চিকিৎসা সমন্বিত ও বহুমাত্রিক চিকিৎসা পদ্ধতি। শল্য চিকিৎসা, চিকিৎসা, রেডিওথেরাপি (বিকিরণ চিকিৎসা), কেমোথেরাপি, হরমোন চিকিৎসা ও ইমিউনোথেরাপি, টারগেটেড থেরাপি সমন্বিতভাবে প্রদান করা যায়। এই রোগের মূল লক্ষ্য দুইটি (১) মূল টিউমার অপসারণ এবং (২) সামগ্রিক চিকিৎসা প্রদান।
শল্য চিকিৎসা (সার্জারি)
সার্জারি স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অন্য যে কোন চিকিৎসার চেয়ে রোগীকে বেশি আরোগ্য করে। যদি টিউমার স্তনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, শরীরের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়া টিউমারের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা নগণ্য।
রেডিওথেরাপি
এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে মূল টিউমার এলাকা। সাধারণত অপারেশনের পরও চোখে দেখা যায় না যদি এমন কিছু কোষ থেকে থাকে, তাকে দমন করা। সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে। যখন এ রোগ মস্তিষ্ক বা হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে তখন জরুরী ভাবে পেলিয়েশন বা প্রশমন করার জন্য রেডিওথেরাপির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রেডিওথেরাপি দেয়া যায় বলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
কেমোথেরাপি ও হরমোন
প্রায় প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রেই কেমোথেরাপি হরমোনথেরাপি প্রয়োগ করা যায়। সামগ্রিকভাবে শরীরের সর্বত্রই এই রোগের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য এর ব্যবহার অপরিহার্য। দেখা গেছে, খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণীত হলে এবং যথোপযুক্ত চিকিৎসা নিলে শতকরা ৭৫-৮০ ভাগ রোগী ১০ বছরেরও বেশি বেঁচে থাকে। মাঝ পর্যায়ে নির্ণীত হলে এই হার ৫০ থেকে ২৫ শতাংশে নেমে আসে এবং শেষ পর্যায়ে ভাল কিছু করার সুযোগ প্রায় থাকেই না। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো যথোপযুক্ত চিকিৎসা নেয়া এ রোগ মোকাবেলা করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে করণীয়
ক্যান্সার সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান বিশেষ করে এর কারণসমূহ ও কিভাবে প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্ভব সে সম্পর্কিত প্রচার বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহে সামাজিক বাধা ও লাজলজ্জা দূরে করে সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।
মহিলাদের রোগ চিকিৎসায় সময়মতো উদ্যোগী হওয়া এবং অবহেলা না করা। নির্ণীত রোগীর ক্ষেত্রে সামাজিক বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে তার পক্ষে নৈতিক ও সামাজিক সমর্থন জোরদার করা। সহিঞ্চুতা, সহযোগিতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি ক্যান্সার নিরাময়ে সহায়ক।
ডাঃ কাজী মনজুর কাদের
সহযোগী অধ্যাপক
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল মহাখালী, ঢাকা
প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯; দৈনিক জনকণ্ঠ